তেরো থেকে একুশে পতনজনিত জটিলতার বয়ান গত চল্লিশ বছর ধরে তার কাছে থাকা চাবির গোছাটাকে যেমন চেনে বশির আলি, তেমন চেনে তালার একেকটা ছিদ্রকে। তালার ছিদ্রকে অবশ্য বশির আলি ছিদ্র বলে না। বলে — না, যা বলে ,তা ভদ্র সমাজে না উচ্চারণ করাই ভালো। করলে নিজেকে ডিক্লাসড করা যায় বলে মনে হলেও আদৌ তা সম্ভব হয় কি না সন্দেহ। তো বশির আলির এই চাবির গোছাই তার সম্বল। গোছার ভেতর নব্বই শতাংশ চাবিরই কোনো তালা নেই। অথবা থাকলেও কোনটার ভেতর কোনটা সেঁধোবে তা মনে করতে পারে না। কেবল খানতিনেক চাবি তার রোজকার ব্যবহারে লাগে। সকাল সন্ধে যে দোকানটা সে চালায়, তার শাটারের জন্যে দুটো, আর ভেতরের গ্রিলের জন্যে একটা। দোকানটার বিবরণ দেয়ার মতো কিছু নেই। কিচ্ছুই নেই। এই না-থাকাটাই তার প্রধান বৈশিষ্ট্য। জনসাধারণ এই দোকানটিকে রকমারি স্টোর্স নামে চিনলেও, ডাকে ঝকমারি স্টোর্স বলে। যখনই ক্রেতাসাধরণ কিছু কিনতে যান, তখনই বশির বলে দেয় — নেই।
বাংলা সাহিত্য - অনলাইন বাংলা ম্যাগাজিন