Skip to main content

Posts

Showing posts from September, 2018

সৌমেন বন্দোপাধ্যায়

সেতুবন্ধন শুরু আর শেষ দৃশ্য অনেকটা একইরকম। অবশ্য দৃশ্যান্তর নানা রঙে ঝলমলে। এখনোও উজ্জ্বল।   সময় কাল ১৯৯০ সাল। আমি তখন দশ বছরের। পঞ্চম শ্রেণী। নতুন স্কুল। নতুন নতুন বন্ধু। প্রথম প্রথম একটু অসুবিধা হলেও পরে পরে ক্লাসের সবার সাথে ভাব হয়ে গেল। স্কুলে আসা-যাওয়া এভাবেই ছয় মাস কেটে গেল। অর্ধ-বার্ষিকী পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হল। আমি ক্লাসের মধ্যে ষষ্ঠ স্থানে রইলাম, তবে বাংলায় সবচেয়ে বেশি নম্বর আমি পেয়েছিলাম দেখে ক্লাসের ফাস্ট বয় গৌতম কয়াল আমাকে ডেকে বলল, ‘ব্যানার্জী, বাংলায় তুমি আমার থেকে ২০ নম্বর বেশি পেয়ে আমাকে চমকে দিয়েছো। আজ থেকে তুমি আমার বেষ্ট ফ্রেণ্ড।’ সেই থেকে আমি ওকে গৌতম আর ও আমাকে ব্যানার্জী ডাকতাম।

তাপস দাস

চিত্ত দর্পণ গ্রাম বাংলার রন্ধ্রে রন্ধ্রে ভূপতিবাবুদের আড্ডাখানা আজও আছে। সবুজে ঘেরা মেঠো পথের পাশে পাশে মাচার মজলিস যুগ যুগ ধরে বিরাজমান। গ্রীষ্মের দাবদাহ, মাটির সোঁদা গন্ধে ভরা দুরন্ত বর্ষণবেগ,উৎসব মুখরিত শরতের আওয়াজ,শিশিরে ভেজা হেমন্ত, শীতের কামড়,বসন্তের মদন বাতাস সবকিছুর মধ্যে সগর্বে দাঁড়িয়ে থাকে এই সব আড্ডাখানা গুলি। পাড়ায় থাকেন অমিয় ডাক্তার। তিনি গ্রাম পঞ্চায়েতের নির্বাচিত জনপ্রতিধিও। তাঁর সুদৃশ্য অট্টালিকার এক পাশে সুউচ্চ বট গাছ দাঁড়িয়ে প্রাচীনতার গৌরব বহন করে। গ্রীষ্মের দাবদাহকে পরাজিত করে বৃদ্ধাঙ্গুষ্ঠ প্রদর্শন করার জন্য, কিছুটা মোসাহেবি করার জন্য আশেপাশের কয়েকটি পাড়া থেকে কেষ্ট বিষ্টু থেকে হরিদাস পালদের আনাগোনা চলতে থাকে।

মহ. আসফাক আলম

তোর নামটা রায়গঞ্জ সারদা বিদ্যামন্দিরের মাঠে আতীব, তার বাবা সুজা ও মা রোমা সকাল সাড়ে দশটা থেকে অপেক্ষা করে বসে আছে। পরীক্ষার সময় দেওয়া হয়েছিল সকাল এগারোটা। চল্লিশ কিমি দূর থেকে আসতে হয় বলে সকাল সকাল বের হয়েছিল তারা । সেরকম ভাবে মুখে কিছু দেওয়া হয়নি। তাই বাস থেকে নেমেই শ্রীদুর্গা রেস্টুরেন্টে ঢোকে তারা । গরম গরম লুচি ভাজা হচ্ছিল সেখানে । তা খেয়ে সোজা চলে আসে স্কুলে । সেই থেকে বসে আছে। এখন বেলা একটা বাজে। শুধু বসে আছে তা বলা যাবে না। আতীব তাদের শান্তিতে কি বসে থাকতে দেওয়ার পাত্র ? দাপিয়ে বেড়াচ্ছে পুরো মাঠ। দোলনা, পিছলে পড়ার জিরাফ সিঁড়ি, ঘুরন্ত চেয়ার ইত্যাদি নিয়ে পুরো ব্যস্ত রয়েছে। ব্যস্ত করে রেখেছে তার বাবা মাকে । তাতে ক্লান্ত হয়ে পড়েছে সুজা । কিন্তু তার চিন্তা কেবল আতীবকে নিয়ে – সে যদি ক্লান্ত হয়ে পড়ে! পরীক্ষকের সামনে যদি কিছু না বলতে পারে! তাহলে কী হবে? শেষের দিকে ডাক আসে আতীবের। তখন বেলা দু’টো। মাইকে হাঁক দেয়, আ তীব, পিতা সুজা, শ্রেণি - উদয়। নয় নম্বর কক্ষে পরীক্ষা ও ইন্টারভিউ’য়ের জন্য ডাকা হচ্ছে।

রাহুল মজুমদার

কবিতা দুর্যোধন সামন্তের বাড়ির বৈঠকখানায় বসে ভীষণ বিরক্ত লাগছিল পরমের । দুর্যোধনের চাকর তাকে বসিয়ে রেখে তার মনিবকে বাড়ির ভিতর খবর দিতে গেল । কিন্তু ফিরে আসবার আর নাম করে না. প্রায় এক ঘন্টা হয়ে গেল, বসে রয়েছে পরম । এমনিতেই দুর্যোধনের বাড়িতে আসবার কোনো প্রয়োজনই ছিল না তার, আসতে হল ছাত্রছাত্রীদের মুখ চেয়ে । কলকাতা থেকে প্রায় পঁয়ত্রিশ কিলোমিটার দুরের গৌরমোহন ভাদুড়ি মহাবিদ্যালয়ের বাংলার অধ্যাপক পরম অর্থাৎ পরমব্রত সেনগুপ্ত । থাকে কলকাতায়, ট্রেনে চেপে শিয়ালদহ থেকে মালতীপুর স্টেশন এসে নামে সে । তারপর সেখান থেকে ভ্যানরিক্সা ধরে তিন কিলোমিটার দুরের কলেজে যেতে হয় ।